মানুষ গড়ার কারিগর হিসাবে কাজ করছেন ৬ বছর ধরে। বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদের তিনি সন্তানের মতই মমতা ও ভালবাসা দিয়ে আগলে রাখেন। তিনি শিক্ষার্থীদের সর্বদা ভাল-মন্দ বিষয়ে খোঁজ খবর রাখেন ভুলেন না শত ব্যস্ততার মাঝেও। গ্রামের মানুষের কাছে তিনি গরিবের শিক্ষক হিসাবে পরিচিত। চলাফেরা ও জীবন যাপন করেন সাদামাটা ভাবে। নিজের আদর্শ ধরে রাখতে চান মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। লাকসামের আল-আমিন ইনস্টিটিউটের ইংরেজি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক জনাব ফরিদ উদ্দিন স্যারের শিক্ষকতা জীবনের গল্প।
সহকারী শিক্ষক জনাব ফরিদ উদ্দিন লাকসাম উপজেলার তাঁতিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহন করেন ১৯৯৫ সালে।তিনি নরপাটি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১০ সালে কৃত্বিতের সহিত এসএসসি পাশ করেন। বাবা ছিলেন একজন চাকুরীজীবি। তারপর তিনি ২০১২ সালে কৃত্বিতের সহিত এইচএসসি পাশ করেন লাকসাম কলেজ থেকে।
তারপর তিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে ইংরেজি বিষয় নিয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাশ করেন। ছাত্রজীবনে মেধাবী হওয়ার পাশাপাশি ওনি ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারি।পড়ালেখার পাশাপাশি নানাবিধ সামাজিক কর্মকান্ড এবং খেলাধুলা স্কাউটসহ নানাবিধ সেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন।
তিনি বলেন, তাঁতিপাড়া ও পার্শ্ববর্তী গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ ছিল দরিদ্র ও শিক্ষাবিমূখ। তারা ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার জন্য স্কুলে পাঠাতেন না। স্কুলের ক্লাস শেষে নিয়মিত গ্রামের প্রত্যেকটি বাড়িতে ঘুরে ঘুরে অভিভাবকদের ও শিক্ষার্থীদের উৎসাহী করেন এবং শিক্ষার নানান সুফল তুলে ধরেন এতে করে দিনদিন বাড়তে থাকে বিদ্যালয় মুখী শিক্ষার্থীর সংখ্যা । তিনি স্বপ্ন দেখেন শিক্ষিত একটি সমাজ গঠনের।
শিক্ষার্থীদের ক্লাসের পড়া তিনি ক্লাসে শেষ করান। যারা দুর্বল শিক্ষার্থী তাদেরকে বাড়িতে আলাদাভাবে পড়ান। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ছেলেরা এসে বিভিন্ন হোস্টেলে থাকে তিনি নিয়মিতভাবে তাদের ভালোমন্দের খোঁজখবর ও রাখেন।শিক্ষার্থীদের তিনি ইংরেজি বিষয়ে পড়ান। ৮ম শ্রেণিতে অধ্যায়নরত অবস্থায় তিনি গ্রামের ছেলে-মেয়েদের বাড়িতে প্রাইভেট পড়াতেন। সেখান থেকেই তার শিক্ষকতায় আসার আগ্রাহ তৈরি হয়। তিনি শিক্ষকতাকে আদর্শ ও মহৎ পেশা হিসাবে বুকে ধারণ করেন।
এসএসসি পাশ করার পর অনেকে কলেজ ও কলেজ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারে না টাকার অভাবে। তাদের অর্থ দিয়ে সহায়তা করেন। সর্বদা শিক্ষার্থীদের পাশে থাকেন। বর্তমানে তার অনেক ছাত্র ভালো অবস্থায় রয়েছে। কেউ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, মেডিকেলকলেজসহ বিভিন্ন কলেজে রয়েছে।
তিনি বলেন, কোচিং একটা ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। ছেলে-মেয়েরা কেন জানি না বুঝে সারাদিন কোচিং কোচিং করে মাথা নষ্ট করে। ক্লাসের পড়া ক্লাসে শেষ করলে কোচিং এর প্রয়োজন হয় না। কোচিং এর কারণে শিক্ষার্থীদের ব্যবহার ও আচরণে বেশ পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। আগের দিনের ছেলে-মেয়েরা শিক্ষকদের সাথে ভালো ব্যবহার করতো। রেজাল্ট বেশি ভালো হয় না। লাভের চাইতে ক্ষতি বেশি বর্তমান সময়ে। কোচিং এ একটা সুবিধা আছে চাপে রাখে পড়াশুনার জন্য।
জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত এভাবে শিক্ষার্থীদের পাশে থাকতে চান তিনি।একজন আর্দশ শিক্ষকের সকল গুণাবলি ওনার মধ্যে রয়েছে।ওনার জন্য রইল শুভ কামনা।
লাকসাম২৪নিউজ/রাকিবুল হাসান
0 মন্তব্যসমূহ